শ্বেতপাথরের স্বপ্ন
আমি শাহ জাহানের যমুনা
মুমতাজ এর নিরবতা, শীতল স্মৃতির আচ্ছাদন
আমার স্রোত কে করেছে ধীর.
চাঁদনী রাতে শ্বেতপাথরের ছায়া,
ভালবাসার প্রতিছবি, আমার সারা গায়ের উপর,
আষ্টেপিষ্টে মোড়া উষ্ণতার চাদর.
সাক্ষী আমি, অনেক রক্তপাতের
মুঘল মসনদের অপরাধের দলিল.
করিম মিয়ার স্বপ্ন আমি,
পাথর কেটে যার জীবন যাপন.
গ্রীষ্মের তাপে, গামছা ভিজিয়ে
খেজুর গাছের নিচে, এক পলক ঘুম.
শাহ জাহানের স্বপ্ন, করিমের দিবা-নিশি
জেগে থাকা.
করিম মিয়া, বরই রসিক মানুষ,
পাথর কাটতে কাটতে কত কথায় না বলত.
চানা ভাজা আর খেজুর ছিল তার সব থেকে প্রিয়!
বিশাল অট্টালিকার মাঝে, করিম মিয়ার ছোট্ট মেয়ে আলিনা,
ছুট্টে বেরাছে করিমএর সাথে,
করিমের গায়ে নতুন জামা, পায়ে নতুন জুতো,
মেহেন্দি করা চুলে, জরির টুপি.
আরামকেদারায় করিম মিয়া একটু বিশ্রাম নিচ্ছে,
ঠিক তক্ষনই আলিনা একটা ময়ুর পালক দিয়ে,
করিম এর কানে দিল সুরসুরি!
খিলখিলিয়ে যেই না হাঁসে করিম, অমনী এক বেতের ঘা,
সপাট করে পড়ল!
করিমের স্বপ্ন ভেঙ্গে গেল.
চোখের জলে স্বপ্নের জল ছবিটা আবার কেমন যেন আবছা হয়ে গেল.
সারা রাত করিমের ঠুক ঠাক শব্দ
আমাকে জাগিয়ে রাখত.
বহু বছর ধরে তৈরী হলো শাহ জাহানের তাজ মহল.
পৃথিবীর বুকে এ যেন এক পূর্নিমার চাঁদ.
ভালবাসার মক্কা, পৃথিবীর অষ্টম আশ্চর্য.
সুক্ষ তার কারুকার্য,
বহুমূল্য জহরতে মোড়া, ভালবাসার মাখ-বরাহ!
কিন্তূ করিম মিয়া কোথায় ?
ওই গামছা ভেজা, জোড়া জীর্ণ মানুষ তা কোথায় ?
তাকে আর দেখা যাই নি.
আমার জলের রং লাল,
সেই সব পারদর্শী শ্রমিকের আঙ্গুল
আমি বয়ে নিয়ে চলেছি,
সহস্র বছর ধরে, আমার নিরবতার প্রতিবাদ.
আঘাত দিয়ে জয় করে নিতে চেয়েছিল শাহ জাহান,
নির্মূল করতে চেয়েছিল সৃষ্টি কর্তাদের
পৃথিবীর বুক থেকে মুছে দিতে চেয়েছিল তাদের অস্তিত্ব.
আজ আমি জীর্ণ
আমার স্রোত আজ ক্ষীণ,
আজ আর দেখা যায় না, তাজ মহলের প্রতিছবি.
আমি ভুলতে বসেছি সব কিছু.
মনে নেই আমার মুমতাজএর চেহারা
মনে নেই আমার শাহ জাহানের দাপট
মনে নেই আমার ঔরান্গাজেবএর নাশকতা
মনে আছে সুধু করিম মিয়ার ভেজা গামছা,
চানা আর খেজুর এর নাস্তা,
মনে আছে স্বপ্নের মধেই আলিনার ছেলেখেলার গল্প,
মনে আছে, মধ্য রাতের ক্রন্ধন,
মনে আছে, ছেনির ঠুক ঠাক!
আমি জানি, এই তাজ মহল করিম মিয়ার
আমি জানি, এই যমুনার তীরে
কোনো এক খেজুর গাছের নিচে
বৃদ্ধ করিম স্বপ্ন দেখছে!
- রাম কমল
আমি শাহ জাহানের যমুনা
মুমতাজ এর নিরবতা, শীতল স্মৃতির আচ্ছাদন
আমার স্রোত কে করেছে ধীর.
চাঁদনী রাতে শ্বেতপাথরের ছায়া,
ভালবাসার প্রতিছবি, আমার সারা গায়ের উপর,
আষ্টেপিষ্টে মোড়া উষ্ণতার চাদর.
সাক্ষী আমি, অনেক রক্তপাতের
মুঘল মসনদের অপরাধের দলিল.
করিম মিয়ার স্বপ্ন আমি,
পাথর কেটে যার জীবন যাপন.
গ্রীষ্মের তাপে, গামছা ভিজিয়ে
খেজুর গাছের নিচে, এক পলক ঘুম.
শাহ জাহানের স্বপ্ন, করিমের দিবা-নিশি
জেগে থাকা.
করিম মিয়া, বরই রসিক মানুষ,
পাথর কাটতে কাটতে কত কথায় না বলত.
চানা ভাজা আর খেজুর ছিল তার সব থেকে প্রিয়!
বিশাল অট্টালিকার মাঝে, করিম মিয়ার ছোট্ট মেয়ে আলিনা,
ছুট্টে বেরাছে করিমএর সাথে,
করিমের গায়ে নতুন জামা, পায়ে নতুন জুতো,
মেহেন্দি করা চুলে, জরির টুপি.
আরামকেদারায় করিম মিয়া একটু বিশ্রাম নিচ্ছে,
ঠিক তক্ষনই আলিনা একটা ময়ুর পালক দিয়ে,
করিম এর কানে দিল সুরসুরি!
খিলখিলিয়ে যেই না হাঁসে করিম, অমনী এক বেতের ঘা,
সপাট করে পড়ল!
করিমের স্বপ্ন ভেঙ্গে গেল.
চোখের জলে স্বপ্নের জল ছবিটা আবার কেমন যেন আবছা হয়ে গেল.
সারা রাত করিমের ঠুক ঠাক শব্দ
আমাকে জাগিয়ে রাখত.
বহু বছর ধরে তৈরী হলো শাহ জাহানের তাজ মহল.
পৃথিবীর বুকে এ যেন এক পূর্নিমার চাঁদ.
ভালবাসার মক্কা, পৃথিবীর অষ্টম আশ্চর্য.
সুক্ষ তার কারুকার্য,
বহুমূল্য জহরতে মোড়া, ভালবাসার মাখ-বরাহ!
কিন্তূ করিম মিয়া কোথায় ?
ওই গামছা ভেজা, জোড়া জীর্ণ মানুষ তা কোথায় ?
তাকে আর দেখা যাই নি.
আমার জলের রং লাল,
সেই সব পারদর্শী শ্রমিকের আঙ্গুল
আমি বয়ে নিয়ে চলেছি,
সহস্র বছর ধরে, আমার নিরবতার প্রতিবাদ.
আঘাত দিয়ে জয় করে নিতে চেয়েছিল শাহ জাহান,
নির্মূল করতে চেয়েছিল সৃষ্টি কর্তাদের
পৃথিবীর বুক থেকে মুছে দিতে চেয়েছিল তাদের অস্তিত্ব.
আজ আমি জীর্ণ
আমার স্রোত আজ ক্ষীণ,
আজ আর দেখা যায় না, তাজ মহলের প্রতিছবি.
আমি ভুলতে বসেছি সব কিছু.
মনে নেই আমার মুমতাজএর চেহারা
মনে নেই আমার শাহ জাহানের দাপট
মনে নেই আমার ঔরান্গাজেবএর নাশকতা
মনে আছে সুধু করিম মিয়ার ভেজা গামছা,
চানা আর খেজুর এর নাস্তা,
মনে আছে স্বপ্নের মধেই আলিনার ছেলেখেলার গল্প,
মনে আছে, মধ্য রাতের ক্রন্ধন,
মনে আছে, ছেনির ঠুক ঠাক!
আমি জানি, এই তাজ মহল করিম মিয়ার
আমি জানি, এই যমুনার তীরে
কোনো এক খেজুর গাছের নিচে
বৃদ্ধ করিম স্বপ্ন দেখছে!
- রাম কমল